Sunday, June 7, 2020

বৃটিশ শাসন আমল ও আন্দোলন

ইংরেজঃ ইউরোপীয়ানদের বণিকদের সাফল্যে, প্রাচ্যের ধন-সম্পদের প্রাচুর্য, ইংরজে বণিকদেরকেও অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের উৎসাহিত করে। এই উদ্দেশ্যে ইংল্যান্ডের একদল বণিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নামে একটি বণিক সংঘ করে। বণিক সঙ্ঘটি ১৬০০ খ্রীষ্টাব্দে রাণি এলিজাবেথের কাছে ১৫ বছর মেয়াদি প্রাচ্যে একচেটিয়া ব্যবসা করার সনদ লাভ করে। এরপর ক্যাপ্টেন হকিন্স ১৬০৮ খ্রীষ্টাব্দে জেমসের সুপারিশপত্র নিয়ে বাণিজ্য সম্প্রসারণ লক্ষ্যে সম্রাট জাহাঙ্গীরের নিকট সাক্ষাত করেন। তার অনুমতি নিয়ে ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে সুরাটে বাণিজ্য কুঠি স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে ১৬১৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রম জেমসের দূত হয়ে জাহাঙ্গিরের দরবারে আসেন স্যার টমাস রো। সম্রাটের কাছে থেকে তিনি ইংরেজদের জন্য বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করে নেন। ১৬১৯ খ্রিঃ তিনি ভারতবর্ষ ত্যাগ করেন।  কোম্পানি তার দ্বিতীয় বাণিজ্যকুঠি স্থাপন করে মসলিমপট্রমে। এরপর বাংলার বালাসোর আরেকটি বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। এদের শক্তি ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকলে এরা করমন্ডল (মাদ্রাসা শহর) উপকূলে একটি দূর্গ নির্মাণ করতে সক্ষম হয়। বাংলার সুবেদার শাহ সুজার অনুমোদন লাভ করে তারা ১৬৫৮ খ্রিস্টাব্দে হুগলিতে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। এভাবে কোম্পানি কাশিমবাজার, ঢাকা, মালদহেও বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে।
১৬৬৮ খ্রিঃ ইংল্যান্ড রাজা দ্বিতীয় চার্লস পর্তুগীজ রাজকন্যা ক্যাথরিনের সঙ্গে বিয়ের যৌতুক হিসেবে লাভ করেন বোম্বাই শহর। অর্থাভাবে চার্লস ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কাছে পঞ্চাশ হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে শহরটি বিক্রি করেন। পরবর্তীকালে এই বোম্বাই শহর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হয়।
জব চার্ণক নামে আরেকজন ইংরেজ ১৬৯০ খ্রিস্টাব্দে ১২০০ টাকার বিনিময়ে কোলকাতা, সুলতানটি ও গোবিন্দপুর নামে তিনটি গ্রামের জমিদারীসত্ব লাভ করেন। এখানেই ১৭০০ খ্রিঃ ইংল্যান্ডের তৃতীয় উইলিয়ামের নাম অনুসারে ফোর্ট উইলিয়াম দূর্গ নির্মাণ করে। ইংরেজ কোম্পানির ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পায় যখন দিল্লীর সম্রাট ফারুখশিয়ার তাদের বাংলা, বোম্বাই ও মাদ্রাজে বিনা শুল্কের বাণিজ্যের অধিকার প্রদান করেন। একই সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রা প্রচলনের অধিকারও কোম্পানি লাভ করে। সম্রাটের এই ফরমানকে ইংরেজ ঐতিহাসিক ওরমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মহাসনদ বা ম্যাগনা কার্টা বলে উল্লেখ করেন।
ফরাসীঃ উপমহাদেশে আগত ইউরোপীয় বণিক কোম্পানি হচ্ছে ফরাসী ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে এই বাণিজ্যিক কোম্পানি গঠিত হয়। ১৬৬৮ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানি সর্বপ্রথম সুরাট এবং পরের বছর মুসলিমপট্রমে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করেন। ১৬৭৩ খ্রিস্টাব্দে পন্ডিচেরীতে ফরাসী উপনিবেশ গড়ে উঠে। ১৬৭৪ খ্রিঃ পর তারা তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। ১৬৯০ থেকে ১৬৯২ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে চন্দননগর একটি শক্তিশালী সুরক্ষিত ফরাসী বাণিজ্য কুঠিতে পরিণত হয়। ১৬৯৬ খ্রিঃ কোম্পানি এখানে একটি শক্তিশালো দূর্গ স্থাপন করতে সক্ষম হয়। ১৬৯৩ সালে বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার বাণিজ্য করার অধিকার লাভ করে। ইংরেজ বণিকরা যখন এদেশে ব্যবসা বাণিজ্যে দৃঢ় অবস্থানে তখন ফরাসীরা আসে। তাই ইংরেজদের সাথে তাদের সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে দাঁড়ায়।
পলাশী যুদ্ধঃ ১৭৪০-১৭৫৬ সাল পর্যন্ত বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার নবাব ছিলেন নবাব আলীবর্দী খান। নবাবের মৃত্যুর পর তার কনিষ্ঠা কন্যা আমেনা বেগমের পুত্র সিরাজউদ্দৌলা কে তার উত্তরাধিকার হিসেবে সিংহাসনে মনোনিত করেন। ১৭৫৬ সালে নবাব আলীবর্দী খানের মৃত্যু হলে তার প্রিয় দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলা ২২ বছর বয়সে নবাবের ক্ষমতা গ্রহণ করেন। ১৭৫৬ খ্রিঃ জুনমাসে নবাব ইংরেজদের ঔদ্ধ্বত্যপূর্ণ আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে কোলকাতা দখল করেন। যাত্রাপথে তিনি কাশিমবাজার কুঠিও দখল করেন। নবাবের অতর্কিত আক্রমণে ইংরেজরা ফোর্ট উইলিয়াম দূর্গ ত্যাগ করে পালিয়া যায়। হলওয়েলসহ বেশ কিছু ইংরেজ আত্নসমর্পণ করতে বাধ্য হন। বন্দিদশা থেকে  মুক্তি পেয়ে নবাবকে হেয় করার জন্য হলওয়েল এক মিথ্যা কাহিনীর অবতারণা করেন যা ইতিহাসে অন্ধকূপ হত্যা নামে পরিচিত। এতে বলা হয়যে, ১৮ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১৪.১০ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট একটি ছোট ঘরে ১৪৬ জন ইংরেজকে বন্দি করে রখা হয়। এতে প্রচন্ড গরমে শ্বাসরোধ হয়ে ১২৩ জনের মৃত্যু ঘটে। এখবর শুনে ওয়াটসন ও ক্লাইভ মাদ্রাজ থেকে কলকাতা চলে আসে। তারা নবাবের সেনাপতি মানিকচাঁদকে পরাজিত করে কোলকাতা দখল নেয়। নবাব চারিদিকে ষড়যন্ত্র ও শত্রু পরিবেষ্টিত টের প্যে ইংরেজদের সঙ্গে নতজানু ও অপমানজনক সন্ধি করতে বাধ্য হয় যা আলীনগর সন্ধি নামে পরিচিত। এ সন্ধির পর ক্লাইভের উচ্চাকাংখা আরও বৃদ্ধি পায়। নবাবের দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে তারা চন্দন নগর কুঠি দখল করে নেয়। নবাব এই অবস্থা দেখে ফরাসীদের সাথে মৈত্রী চুক্তি করে ইংরেজদের শায়েস্তা করার জন্য। এতে ক্লাইভ ক্ষুব্ধ হয়ে নবাবকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন আর এই ষড়যন্ত্রে আরো লিপ্ত হন ব্যবসায়ী ধনকুবের জগতশেঠ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, রাজা রাজবল্লভের সেনাপতি মীরজাফর সহ প্রমুখ।
১৭৫৭ খ্রিঃ ২৩ জুন ভগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে এ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ইতোমধ্যে রবার্ট ক্লাইভ তার অবস্থান সুদৃঢ় করে সন্ধিভঙ্গের আজুহাতে সিরাজউদ্দৌলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। নবাবের পক্ষে দেশপ্রেমিক মীরমদন, মোহনলাল এবং ফরাসী সেনাপতি সিন ফ্রে প্রাণপন যুদ্ধ করে। নবাবের বিজয় আসন্ন দেখে মীরজাফর ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে যুদ্ধ থামিয়ে দেয় এবং বিশ্রাম নিতে যাওয়া সৈন্যদের উপর ইংরেজ সৈন্যরা ঝাপিয়ে পড়ে। নবাবের পরাজয় হয়। শেষ হয় বাংলার শেষ স্বাধীন নবাবের শাসন অধ্যায়কাল।
সূফি বরষণ: June 2016
বক্সারের যুদ্ধঃ ইংরেজী বণিক কোম্পানি মীর জাফরকে যে উদ্দেশ্যে সিংহাসনে বসিয়েছিল সে উদ্দেশ্য সফল হয় নি। নতুন নবাব কোম্পানির প্রাপ্য অর্থ প্রদানে ব্যর্থ হয় দেউলিয়া হয়ে পড়ে। নিজের ক্ষমতা রক্ষা করতেও তাকে বার বার ক্লাইভের উপর নির্ভর করতে হয়। আবার ক্লাইভের ঘন ঘন হস্তক্ষেপে নবাবের পছন্দ ফহিল না। ইংরেজদের বিতাড়নের জন্য মীর জাফর আরেক বিদেশি কোম্পানি ওলন্দাজদের সাথে আঁতাত করে। বিষয়টি ইংরেজদের দৃষ্টিগোচর হয়। মীরজাফরের বিরুদ্ধে অযোগ্যতা, অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের অক্ষমতা এবং ওলন্দাজদের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ১৭৬০ খ্রিঃ ইংরেজ গভর্নর ভন্সিটার্ট মীরজাফরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে মীর কাশিমকে শর্ত সাপেক্ষে সিংহাসনে বসান। মীরকাশিমকে স্বাধীন নবাব হিসেবে টিকে থাকার ইচ্ছার কারণে মূলত বক্সারের যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
কিন্তু ইংরেজরা মীর জাফরকে পুনরায় বাংলার সিংহাসনে বসায়। মীর কাশিম পরাজিত হয়েও হতাশ হননি। নবাব ইংরেজদের মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকেন। তিনি অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা এবং মুঘল সম্রাট শাহ আলমের সঙ্গে একত্রিত হয়ে ১৭৬৪ সালে বিহারের বক্সারের নামক স্থানে ইংরেজদের বিরুদ্ধে চরম শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন। মীর কাশিমের পরাজয়ের পর বাংলার সার্বভৌমত্ব উদ্ধারের শেষ চেস্টা ব্যর্থ হয়ে যায়।
 কোম্পানির দেওয়ানী লাভঃ ১৭৬৫ খ্রীঃ মীর জাফরের মৃত্যুর পর তার পুত্র নামিজ-উদ-দৌলাকে শর্ত সাপেক্ষে বাংলার সিংহাসনে বসানো হয়। ইংরেজরা তাকে শর্ত দেন ইংরেজরা অবাধে পুরোদস্তর পুরাতন নিয়মে বিনা শুল্কে বাণিজ্য করবে এবং দেশিয় বণিকদের অবাধ বাণিজ্য বাতিল করবে। বক্সারের যুদ্ধের পর ইংরেজদের শাসন পথ সুগম হয়। এ সময় ইংরেজ কোম্পানি মুঘল সম্রাটের কাছ থেকে বাংলার রাজস্ব আদায়ের সম্পূর্ণ দায়িত্ব অর্থাৎ দেওয়ানী লাভ করে। ১৭৬৫ খ্রিঃ দেওয়ানি লাভের পর প্রকৃতপক্ষে ইংরেজরাই বাংলার সত্যিকারের শাসকরূপে আত্নপ্রকাশ করে।
দ্বৈত শাসনঃ রবার্ট ক্লাইভ দেওয়ানী সনদের নামে বাংলার সম্পদ লুন্ঠনের একচেটিয়া ক্ষমতা লাভ করে। দিল্লী কতৃক বিদেশী বণিক কোম্পানিকে এই অভাবিত ক্ষমতার সৃষ্টি হয় দ্বৈত শাসনের। অর্থাৎ যাতে করে কোম্পানি লাভ করে দায়িত্বহীন ক্ষমতা, নবাব পরিণত হয় ক্ষমতাহীন শাসকে। অথচ নবাবের দায়িত্ব থেকে যায় ষোলআনা। ফলে বাংলায় এক অভূতপূর্ব প্রশাসনিক জটিলতার সৃষ্টি হয়। যার চরম মাশুল দিতে হয় এ দেশের জনগোষ্ঠীকে। ১৭৭০ খ্রিঃ (১১৭৬ বঙ্গাব্দে ) গ্রীষ্মকালে দেখা দেয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ, যা স্মরণকালের ইতিহাসের ছিয়াত্তরের মন্বন্তর নামে পরিচিত।
১৭৬৫-৭০ খ্রিঃ বাৎসরিক রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ যা ছিল, দূর্ভিক্ষের বছরও আদায় প্রায় তার কাছাকাছি। ১৭৭২ খ্রিঃ ওয়ারেন হেস্টিংস দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটান।
 চিরস্থায়ী বন্দোবস্তঃ লর্ড কর্ণওয়ালিসকে কোম্পানির শাসন ও দুর্নীতিমুক্ত ও সুসংঘটিত করতে ১৭৮৬ খ্রিঃ ভারতের গভর্নর জেনারেল ও সেনা প্রধানের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়। তিনি ১৭৯৩ খ্রিঃ চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বা স্থায়ী ভূমি ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন।
ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলনঃ বাংলায় ফকির সন্ন্যাসী আন্দোলন ছিল বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন। মীরকাশিমের সহযোগী হিসেবে ফকির সন্ন্যাসীরা যুদ্ধ করে। কিন্তু মীর কাশিমের পরাজয়ের পর ইংরেজদের কড়া নজরে থাকে ফকির-সন্ন্যাসীরা। ১৭৬০ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার সন্ন্যাসীরা ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম যুদ্ধ শুরু করে।  ১৭৭১ সালে মজনু শাহ সারা উত্তর বাংলায় ইংরেজবিরোধী তৎপরতা শুরু করেন। ১৭৭৭ খ্রীস্টাব্দ থেকে ১৭৭৬ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর ও ময়মন সিংহ জেলায় ইংরেজদের সঙ্গে মজনু শাহ বহু সঙ্ঘর্ষ লিপ্ত হয়। ১৭৮৭ সালে মজনুশাহ মৃত্যুবরণ করলে নেতৃত্ব গ্রহণ করে মুসা শাহ, সোবান শাহ, চেরাগ আলী শাহ, করিম শাহ, মাদার বক্স সহ প্রমুখ ফকির। ১৮০০ সালে তারা চুড়ান্তভাবে পরাজিত হয় ।
অপরদিকে সন্ন্যাসী বিদ্রোহের নেতা ভবানী পাঠক ১৭৮৭ খ্রীঃ লেফট্যানেন্ট ব্রেনানের নেতৃত্বে একদল বৃটিশ সৈন্যের আক্রমণে দুই সহকারী নিহত হন। সন্ন্যাসীদের আন্দোলনের প্রধান নেতা ছিলেন তিনি। তার মৃত্যুর পর সন্ন্যাসী আন্দোলনের অবসান ঘটে।
তিতুমীরের সংগ্রামঃ মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীর চব্বিশ পরগণা জেলার বারাসাত মহকুমার চাঁদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। উত্তর ভার ও উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশে যখন ওয়াহাবি আন্দোলনের জোয়ার চলছে তখন পশ্চিম বঙ্গে বারাসাত অঞ্চলে এই তিতুমীরের নেতৃত্ব প্রবল আকারে ধারণ করে। উনিশ শতকের শেষ দিকে বাংলায় দুটী ধারা প্রবাহমান ছিল একটি ওয়াহাবি বা মুহাম্মদীয়া আন্দোলন এবং অপরটি ফরায়েজি আন্দোলন নামে খ্যাত। দুটি আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্য ছিল ধর্মীয় সামাজিক কুসংস্কার দূর করে করে মুসলিম সম্প্রদায়কে ধর্মীয় অনুশাসন পালনের সঠিক পথ নির্দেশ দেয়। বাংলার ওয়াহাবিরা তিতুমীরের নেতৃত্বে সংগঠিত হয়েছিল।
তিতুমীর হজ্জ্ব করার জন্য মক্কা যান ফিরে আসেন ১৮২৭ সালে এবং দেশে ধর্ম প্রচার শুরু করেন। তার এই ধর্ম সংস্কার কাজে আত্ননিয়োগ করেন। ১৮৩১ সালে খ্রিঃ নারিকেলবাড়িয়া গ্রামে তিতুমীর তাঁর প্রধান ঘাঁটি স্থাপন করেন। নির্মাণ করেন শক্তিশালী এক বাঁশেরকেল্লা। গোলাম মাসুমের নেতৃত্বে গড়ে তোলে সুদক্ষ লাঠিয়াল বাহিনী।  শেষ পর্যন্ত ১৮৩১ খ্রিঃ তিতুমীরের বিরুদ্ধে ইংরেজ সরকার এক বিশাল সুশিক্ষিত সেনাবাহিনী প্রেরণ করে। মেজর স্কটের নেতৃত্বে এই বাহিনী তিতুমীরের বাঁশেরকেল্লায় আক্রমণ করে। ইংরেজ কামান বন্দুকের সামনে বীরের মত লড়াই করে তিতুমীর পরাজিত হয়।
নীল বিদ্রোহঃ ইংরেজরা এদেশে এসেছিল ব্যবসা-বাণিজ্য করতে। উপমহাদেশের শাসকদের দুর্বলতার সুযোগে তাদের এদেশে শাসক হয়ে উঠে। সেই সময়ে তারা উর্বর ক্ষেতে আগ্রহী হয়ে উঠে। নীল ছিল সেই সময়ের বাণিজ্যিক ফসল। ১৭৭০ খ্রীঃ থেকে ১৭৮০ খ্রীঃ মধ্যে ইংরেজ শাসন আমলে বাংলাদেশে নীলচাষ শুরু হয়।  কৃষকদের নীল চাষের জন্য অগ্রীম অর্থ গ্রহণ বা দাদনের বাধ্য করা হত।  বাংলাদেশে নীল ব্যবসা ছিল একচেটিয়া ইংরেজ বণিকদের। ফরিদপুর, যশোর, ঢাকা, পাবনা, রাজশাহী, নদীয়া, মুর্শিদাবাদে ব্যপক নীল চাষ হত। ১৮৫৯ সালে নীল চাষীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। গ্রামে-গ্রামে কৃষকরা সংগঠিত এবং ঐক্যবদ্ধ্ থাকে। যশোরে নীল বিদ্রোহের নেতা ছিলেন নবীন মাধব এবং বেনী মাধব নামে দুই ভাই। হুগলীতে নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্বনাথ সর্দার ও বৈদ্যনাথ সর্দার। ১৮৬০ সালে দীনবন্ধুমিত্র মিত্রে লেখা “নীলদর্পন” নাটক লেখেন যা তখনকার সমাজে ব্যপক প্রভাব ফেলে।
শেষ পর্যন্ত বাংলার সংগ্রামী কৃষকদের জয় হয়। ১৮৬১ খ্রীঃ ব্রিটিশ সরকার ইন্ডিগো কমিশন বা নীল কমিশন গঠন করে। এই কমিশনের সুপারিশের উপর ভিত্তি করে নীল চাষকে কৃষকদের “ইচ্ছাধীন” বলে ঘোষণা হয়। তাছাড়া ইন্ডিগো কন্ট্রাক্ট বাতিল হয়। এই প্রেক্ষিতে নীল বিদ্রোহের অবসান হয়। পরবর্তী কালে নীলের বিকল্প কৃত্রিম নীল আবিস্কৃত হওয়ায় ১৮৯২ সালে এদেশে নীলচাষ চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
ফরায়েজী আন্দোলনঃ ফরায়েজী আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা হাজী শরীয়তউল্লাহ বৃহত্তর ফরিদপুরের মাদারীপুর জেলার শাসাইল গ্রামে ১৭৮২ খ্রিঃ জন্মগ্রহণ করে। তিনি দীর্ঘ বিশ বছর মক্কায় অবস্থান করে। সেখানে তিনি ইসলাম ধর্মের উপর লেখাপড়া করেন। দেশে ফিরে তিনি বুঝতে পারেন যে বাংলার মুসলমানেরা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা থেকে দূরে সরে গেছে। তাদের মধ্যে অনৈসলামিক, কুসংস্কার, অনাচার প্রবেশ করেছে। তিনি ইসলাম ধর্মকে কুসংস্কার এবং অনৈসলামিক অনাচারমুক্ত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হন।
ফরায়েজি শব্দট আরবি ফরজ (অবশ্য কর্তব্য) শব্ধ থেকে এসেছে। যারা ফ্রজ পালন করে তারাই ফারায়েজি। আর বাংলায় যারা হাজী শরীয়তউল্লাহর অনুসারী ছিলেন। হাজী শরীয়তউল্লাহ যে ফরজের উপর বিশ্বাস করতেন তা পবিত্র কোরআনে বর্ণিত পাঁচটি অবশ্যপালনীয় (ফরজ) মৌলনীতি।
জমিদার শ্রেণী নানা অজুহাতে ফরায়েজি প্রজাদের উপর অত্যাচার শুরু করলে প্রজাদের রক্ষার্থে তিনি লাঠিয়াল বাহিনী তৈরী করে। ১৮৩৯ খ্রীঃ তার উপর পুলিশি নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। ১৮৪০ সালে যখন হাজী শরীয়তউল্লাহ মারা যান তখন ফারায়েজি আন্দোলনের দায়িত্ব পালন করেন তার যোগ্যপুত্র মুহসিনউদ্দিন আহমদ ওরফে  দুদু মিয়া।  তার জন্ম ১৮১৯ সালে। পিতার মত পন্ডিত না হলেও তার সাংগঠনিক দক্ষতা অসাধারণ। দুদু মিয়ার নেতৃত্বে ১৮৫৭ সালে নেতৃত্বে ইংরেজদের বিপক্ষে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুললে ইংরেজরা ভীত সন্ত্রস্থ হয়ে পড়ে। ভীত ইংরেজ তাকে বন্দি করে এবং ১৮৬০ সালে তাকে মুক্তি দেয়। ১৮৬২ সালে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর ফারায়েজী আন্দোলন দুর্বল হয়ে পড়ে।
বৃটিশ রাজত্বের সার সংক্ষেপ ঃ
★ইংরেজ শাসন- ১৭৫৭-১৯৪৭(১৯০ বছর)
★ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসন- ১০০ বছর (১৭৫৮-১৮৫৭)
★রানি ভিক্টোরিয়া সরাসরি শাসন শুরু করে- ১৮৫৮ সালে।

★প্রথম গভর্নর- লর্ড ক্লাইভ।
★শেষ ভাইসরয়- লর্ড মাউন্টব্যাটেন।

★মুসলিম সাহিত্য সমাজের প্রতিষ্ঠাতা- নওয়াব আবদুল লতিফ।
★আলীগড় আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা- সৈয়দ আহমদ খান।
★হিন্দু সমাজ পুনর্জাগরণের অগ্রনায়ক- রাজা রামমোহন রায়।
★মোহামেডান লিটারেরি সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা- নওয়াব আবদুল লতিফ।(১৮৬৩)


★বক্সারের যুদ্ধ - ১৭৬৪ সালে। মীর কাশিমের সাথে।

★খেলাফত আন্দোলনের নেতা ছিলেন- মাওলানা মুহম্মদ আলী ও শওকত আলী।
★অসহযোগ আন্দোলন- ১৯২০-১৯২২ সাল। নেতৃত্ব দেন- মহাত্মা গান্ধী।
★ভারত ছাড় আন্দোলন- ১৯৪২ সালে। এর নেতৃত্ব দেন- মহাত্মা গান্ধী। অপর নামম- আগস্ট বিদ্রোহ।
★দ্বিজাতিতত্ত্ব এর প্রস্তাবক- মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, ১৯৩৯ সালে।

★মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়- ১৯০৬ সালে। প্রতিষ্ঠাতা - স্যার সলিমুল্লাহ। প্রথম সভাপতি- আগা খান।
★বঙ্গভঙ্গ হয় - ১৯০৫ সালে। তৎকালীন লর্ড- লর্ড কার্জন।
★বঙ্গভঙ্গ রদ হয়- ১৯১১ সালে।

★ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত কমিটি- নাথান কমিশন।
★ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস প্রতিষ্ঠিত হয়- ১৮৮৫ সালে।

★ব্রিটিশ আমলে ঢাকা বাংলার রাজধানী হয় - ১ বার(১৯০৫ সালে)
★ঢাকা মোট রাজধানী হয়- ৫ বার

★জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ড ঘটে- ১৯১৯ সালে।
★রবীন্দ্রনাথ ‘নাইট’ উপাধি প্রত্যাখ্যান করেন- জালিওয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে।

★বৃটিশদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন করেন- মাস্টারদা সূর্যসেন (চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেন- ১৮ এপ্রিল, ১৯৩০) ★মাস্টারদা’কে ফাঁসি দেয়া হয়- ১৯৩১ সালে।
★সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ফাঁসি দেয়া হয়- ক্ষুদিরামকে
★‘প্রীতিলতা ওযাদ্দেদার’ জড়িত ছিলেন- মাস্টারদা সূর্যসেনের সঙ্গে বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে।

★লাহোর প্রস্তাবের প্রবক্তা- এ কে ফজলুল হক (১৯৪০)
★ঋন সালিসী আইন- এ কে ফজলুল হক।

★বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী/অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুখ্যমন্ত্রী- এ কে ফজলুল হক।
★ভারত বিভক্তির সময় বাংলার প্রধানমন্ত্রী- হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী।

★ভারত-পাকিস্তান বিভক্তির জন্য গঠিত কমিশন- Radcliffe কমিশন।

#গভর্নরবৃন্দ ও তাদের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমঃ

১. লর্ড ক্লাইভ - দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন (মোঘল সম্রাট শাহ আলমের সঙ্গে চুক্তি করেন) ১৭৬৫

২. লর্ড কার্টিয়ার- ’৭৬-র মন্বন্তর ১৭৭০ (১১৭৬বঙ্গাব্দ)

৩. লর্ড ওয়ারেন হেস্টিংস - ১ম গভর্নর জেনারেল দ্বৈত শাসন ব্যবস্থা রহিত ১৭৭২ সালে। তিনি ৫ শালা বন্দোবস্ত ও ১ শালা বন্দোবস্ত চালু করেন।

৪. লর্ড কর্নওয়ালিস- দশশালা বন্দোবস্ত ১৭৯০ সালে।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত + সূর্যাস্ত আইন ১৭৯৩ সালে। সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা শুরু করেন।

৫.লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক - সতীদাহ প্রথা বিলোপ (রাজা রামমোহন রায়) ১৮২৯ সালে। আদালতে আরবির বদলে ফার্সি ভাষা প্রচলন করেন ১৮৩৫ সালে।

৬. লর্ড ডালহৌসি- রেল যোগাযোগ ১৮৫৩ সালে। বিধবা বিবাহ (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর) ১৮৫৬ সালে চালু করেন। স্বত্ববিলোপ নীতি চালু করে।

৭. লর্ড ক্যানিং - কাগজের মুদ্রা প্রচলন করেন ১৮৫৭ সালে। তার আমলে সিপাহী বিদ্রোহ হয় ১৮৫৭ সালে। ক্ষমতা ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাত থেকে সরাসরি রাণী ভিক্টোরিয়ার হাতে আসে ১৮৫৮ সালে। পুলিশ সার্ভিস ১৮৬১ সালে ও ১ম বাজেট ১৮৬১ সালে।

৮. লর্ড রিপন- ‘ভারতের বন্ধু’ খ্যাত ১ম আদমশুমারি ১৮৬১ সালে চালু করেন।

৯. লর্ড কার্জন- বঙ্গভঙ্গ করেন। নতুন বাংলা প্রদেশের রাজধানী- ঢাকা ১৯০৫ সালে। বাংলা প্রদেশের ১ম লেফটেন্যান্ট গভর্নর- ব্যামফিল্ড ফুলার ১৯০৫ সালে।

১০. লর্ড হার্ডিঞ্জ (২য়) - বঙ্গভঙ্গ রদ করেন ১৯১১ সালে। রাজধানী কোলকাতা হতে দিল্লীতে স্থানান্তর করেন। হার্ডিঞ্জ ব্রিজ (পদ্মা) ১৯১৫ সালে।

১১. লর্ড লিনলিথগো - ভারত ছাড় আন্দোলন হয় ১৯৪২ সালে তার আমলে। পঞ্চাশের মন্বন্তর ১৯৪৩ (১৩৫০ বঙ্গাব্দ)

১২. লর্ড মাউন্টব্যাটেন- সর্বশেষ বৃটিশ গভর্নর।

#উল্লেখযোগ্য আন্দোলনঃ

১. ফকির আন্দোলনঃ নেতৃত্ব দেন- ফকির মজনু শাহ। অন্যান্য- ভবানী পাঠক।

২. তিতুমীরের আন্দোলনঃ তিতুমীর (প্রকৃত নাম- সৈয়দ নিসার আলী)। মৃত্যু- ১৮৩১। ১ম বাঙালি শহীদ। বাঁশের কেল্লা নির্মান করেন - নারিকেলবাড়িয়ায়(ধ্বংস হয়- ১৮৩১ সালে)

৩. ফরায়েজী আন্দোলনঃ হাজী শরীয়তউল্লাহ(শরীয়তপুরে)। তার মারা যাওয়ার পর পরবর্তী নেতা- দুদু মিয়া (হাজী শরীয়তউল্লাহর পুত্র)।

৪. সিপাহী বিদ্রোহঃ ১৮৫৭ শুরু হয়- ব্যারাকপুর থেকে
এনফিল্ড রাইফেলের চর্বির টোটায় গরু ও শূকরের মাংস মেশানোর গুজবে। ফলাফল- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির শাসনের অবসান ঘটে। ভারত সরাসরি রাণী ভিক্টোরিয়ার শাসনাধীন হয়।

৫. নীল বিদ্রোহঃ অবসান ঘটে ১৮৬০ ইংল্যান্ডে শিল্প বিপ্লব হয় ১৮ শতকের শেষের দিকে। গুরুত্বপূর্ণ বই(নাটক)- নীল দর্পণ (দীনবন্ধু মিত্র)

৬. চাকমা বিদ্রোহঃ ১৭৭৬-৮৭ সালে। নেতৃত্ব দদেন- জুম্মা খান।

৭. সাঁওতাল বিদ্রোহঃ ১৮৫৫-৫৬ সালে। নেতৃত্ব দেন- ২ ভাই- কানু আর সিদু।

বাংলায় ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার নওয়াবদের নিকট থেকে ১৬৯০ সাল থেকেই বাণিজ্য চুক্তি স্থাপন করার অধিকার প্রাপ্ত হয়েছিল। 
রবার্ট ক্লাইভ: বাংলার গভর্নর ১৭৫৭-৬০, পুনরায় ১৭৬৫-৬৭  এবং ১৭৬৫ থেকে ১৭৭২ সাল পর্যন্ত বাংলায় দৈত গভর্নর স্থাপন করেন।( ভারতবর্ষে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন প্রতিষ্ঠার মুল হুতা )। ভ্যান্সিটার্ট (১৭৬০–৬৫) : বুসারের যুদ্ধ (১৭৬৪) করটিয়া(১৭৬৯–৭২) : বাংলার দুর্ভিক্ষ (১৭৭০)
প্রধান এজেন্টস, ১৬৮১–৮৪[সম্পাদনা]
নামদপ্তর গ্রহণদপ্তর ত্যাগ
উইলিয়াম হেজেস১৬৮১১৬৮৪
জন বিয়ার্ড১৬৮৪১৬৮৪

প্রেসিডেন্টস, ১৬৮৪–৯৪[সম্পাদনা]

নামদপ্তর গ্রহণদপ্তর ত্যাগ
উইলিয়াম গ্যাফোর্ড১৬৮৪১৬৮৫
জব চার্নক১৬৮৫১৬৯৩
ফ্রান্সিস এলিস১৬৯৩১৬৯৩
চার্লস আইয়ার১৬৯৩১৬৯৪

প্রধান এজেন্টস, ১৬৯৪–১৭০০[সম্পাদনা]

নামদপ্তর গ্রহণদপ্তর ত্যাগ
চার্লস আইয়ার১৬৯৪১৬৯৮
জন বিয়ার্ড১৬৯৮১৬৯৯
চার্লস আইয়ার১৬৯৯১৭০০

প্রেসিডেন্টস[সম্পাদনা]

নামদপ্তর গ্রহণদপ্তর ত্যাগ
চার্লস আইয়ার১৭০০১৭০১
জন বিয়ার্ড১৭০১১৭০৫
এডওয়ার্ড লিটেলটন১৭০৫১৭০৫
'কাউন্সিল দ্বারা শাসিত'১৭০৫১৭১০
এনথনি উয়েলডেন১৭১০১৭১১
জন রাসেল১৭১১১৭১৩
হেজেস১৭১৩১৭১৮
স্যামুয়েল ফ্লেক '১৭১৮১৭২৩
জন ড্যানি১৭২৩১৭২৬
হেনরি ফ্র্যাঙ্কল্যাণড১৭২৬১৭২৮
এডওয়ার্ড স্টিফেনসন১৭২৮১৭২৮
জন ড্যানি১৭২৮১৭৩২
জন স্টেকহাওজ১৭৩২১৭৩৯
টমাস ব্রাডি ২য় ১৭৩৯১৭৪৬
জন ফসটার১৭৪৬১৭৪৮
উইলিয়াম বারউয়েল
১৭৪৮১৭৪৯
অ্যাডাম ডাওসন১৭৪৯১৭৫২
উইলিয়াম  ফ্যাসি১৭৫২১৭৫২
রজার ড্রেক১৭৫২১৭৫৬
লর্ড রবার্ট ক্লাইভ নেতৃত্বে ব্রিটিশ সৈন্য এবং তাদের স্থানীয় মিত্রদের সহযোগিতায় পলাশীর যুদ্ধে ২৩ শে জুন ১৭৫৭ বাংলার নবাব-কে পরাজিত করে মুরশিদাবাদে হত্যা করা হয় এবং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজেদের প্রশাসন স্থাপন করে। ক্লাইভ গভর্নর হন।

গভর্নর (১৭৫৮–১৭৭৪), বাংলার গভর্নর জেনারেল (১৭৭৪–১৮৩৩), ভারতের গভর্নর জেনারেল (১৮৩৩–১৮৫৮)[সম্পাদনা]

নামদপ্তর গ্রহণদপ্তর ত্যাগ
রবার্ট ক্লাইভ১৭৫৮ (গভর্নর হিসাবে)১৭৬০
হেনরি ভ্যান্সিটার্ট১৭৬০১৭৬৫
লর্ড রবার্ট ক্লাইভ১৭৬৫১৭৬৭
হ্যারি ভেরেলেস্ট১৭৬৭১৭৬৯
জন কার্টিয়ার১৭৬৯১৭৭২
ওয়ারেন হেস্টিংস১৭৭২১৭৮৫
জন ম্যাক ফেরসন, ১ম ব্যরনেট ১৭৮৫১৭৮৬
চার্লস কর্নওয়ালিস১৭৮৬১৭৯৩
জন সওর ১৭৯৩১৭৯৮
রিচার্ড ওয়েলেসলি, প্রথম মার্কাস ওয়েলেসলি১৭৯৮১৮০৫
চার্লস কর্নওয়ালিস,১ম  মার্কাস ওয়েলেসলি১৮০৫১৮০৫
জর্জ বার্লো, ১ম ব্যারনেট১৮০৫১৮০৭
গিলবার্ট এলিয়ট মারে কায়নায়নমাওন্ড লর্ড মিন্টো১৮০৭১৮১৩
ফ্রান্সিস রাওডন-হেস্টিংস, ময়রার আর্ল১৮১৩১৮২৩
জন অ্যাডাম১৮২৩১৮২৩
উইলিয়াম আমহার্স্ট, ১ম আর্ল আমহার্স্ট১৮২৩১৮২৮
উইলিয়াম বাটারওর্থ বেইলী১৮২৮১৮২৮
লর্ড উইলিয়ম বেন্টিঙ্ক১৮২৮১৮৩৫
চার্লস মেটকাফ, বিটি১৮৩২১৮৩৬
জর্জ ইডেন, অকল্যান্ড ১ম আর্ল১৮৩৬১৮৪২
এডওয়ার্ড ল', এলেন বুর্গ-এর ১ম আর্ল১৮৪২১৮৪৪
উইলিয়াম উইলবারফোর্স বার্ড১৮৪২১৮৪৪
হেনরি হার্ডিঞ্জ, ১ম ভাইকাউন্ট হার্ডিঞ্জ১৮৪৪১৮৪৮
জেমস ব্রাউন র‍্যামজি ডালহৌসি ১ম মার্কাস১৮৪৮১৮৫৬
চার্টার অ্যাক্ট ১৮৫৩ এর অধীনে ভারতের গভর্নর জেনারেল বাংলার গভর্নর হিসেবে তার সহগামী শেঠিকে এবং ১৮৫৪ সাল  থেকে ছোট লাট নিযুক্ত করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়। 

লেফটেন্যান্ট গভর্নর, ১৮৫৪–১৯১২[সম্পাদনা]

নামদপ্তর গ্রহণদপ্তর ত্যাগ
স্যার ফ্রেডারিক জেমস হ্যালিডে১৮৫৪১৮৫৯
স্যার জন পিটার গ্রান্ট১৮৫৯১৮৬২
স্যার সেসিল বীডন১৮৬২১৮৬৬
স্যার উইলিয়াম গ্রে১৮৬৭১৮৭০
স্যার জর্জ ক্যাম্পবেল১৮৭১১৮৭৪
স্যার রিচার্ড টেম্পল১৮৭৪১৮৭৭
অ্যাশলে ইডেন১৮৭৭১৮৮২
অগাস্টাস থম্পসন১৮৮২১৮৮৭
স্টুয়ার্ট কল্ভিন বেইলী১৮৮৭১৮৯০
চার্লস আলফ্রেড এলিয়ট১৮৯০১৮৯৩
অ্যান্টনি ম্যাকডোনেল১৮৯৩১৮৯৫
অ্যান্টনি ম্যাকডোনেল১৮৯৩১৮৯৫
আলেকজান্ডার ম্যাকেঞ্জি১৮৯৫১৮৯৭
চার্লস স্টিভেনস১৮৯৭১৮৯৮
জন উডবার্ন১৮৯৮১৯০২
জেমস বৌরডিলন১৯০২১৯০৩
অ্যান্ড্রু হেন্ডারসন লেইথ ফ্রেজার১৯০৩১৯০৬
লান্সেলট হ্যারে১৯০৬১৯০৬
ফ্রান্সিস স্ল্যেকে১৯০৬১৯০৮
এডওয়ার্ড নরম্যান বেকার১৯০৮১৯১১
উইলিয়াম ডিউক১৯১১১৯১২
ব্রিটিশ গভর্নরের অধীনে ১৯১১ সালে পূর্ব ও পশ্চিম বাংলাকে একক সরকারের অধিনে এক প্রদেশে পরিনত করা হয়।

গভর্নরস, ১৯১২–৪৭[সম্পাদনা]

নামদপ্তর গ্রহণদপ্তর ত্যাগ
টমাস গিবসন-কারমাইকেল, ১ম ব্যারন কারমাইকেল১৯১২১৯১৭
লরেন্স ডানডাস, জেটল্যান্ডের দ্বিতীয় মার্কাস১৯১৭১৯২২
ভিক্টর বুলওয়ার-লিটন, লিটন এর ২য় আর্ল১৯২২১৯২৭
স্ট্যানলি জ্যাকসন১৯২৭১৯৩২
জন অ্যান্ডারসন১৯৩২১৯৩৪
মাইকেল ন্যচাবুলা, ৫ম ব্যারন ব্র্যাবোর্ন১৯৩৭১৯৩৮
জন আর্থার হার্বার্ট ( কনজারভেটিভ রাজনীতিবিদ)১৯৩৯১৯৪৩
রিচার্ড ক্যাসি, ব্যারন ক্যাসি১৯৪৪১৯৪৬
ফ্রেডেরিক বারোজ১৯৪৬১৯৪৭

No comments:

Post a Comment

ছয় দফা

ছয় দফায় বিধৃত দাবিসমূহ নিম্নরূপ: ১. লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করে পাকিস্তানকে একটি ফেডারেশনে পরিণত করতে হবে, যেখা...