শাসন কাল | শাসক | দেশের সীমা |
---|---|---|
৪০০ খ্রি.পূ. | ঔগ্রসৈন্য (নন্দনবংশের রাজা উগ্রসেনের পুত্র) | (গঙ্গা ও প্রাচ্য) |
৪০০ খ্রি.পূ. | মহারাজা চন্দ্রবর্মন | পুস্করন (বাঁকুড়া থেকে ফরিদপুর-পশ্চিম ও দক্ষিণ বঙ্গ) |
৪০০ খ্রি.পূ. | গুপ্ত বংশের রাজা | গুপ্ত অধিকারে বাংলা মোটামুটি দুইটি ভুক্তিতে বিভক্ত ছিল। পুন্ড্রবর্ধনভুক্তি ও বর্ধমানভুক্তি (বর্তমানের উত্তর ও পশ্চিমবঙ্গ) |
৫০৭-৫০৮ খ্রিষ্টাব্দ | মহারাজাধিরাজ বৈন্যগুপ্ত | পূর্ববঙ্গ |
৫৪০-৫৮০ | গোপচন্দ্র | বঙ্গ |
৫৮০-৬০০ | সমাচার দেব | বঙ্গ |
৬০৬-৬২৫ | শ্রীমহাসামন্ত শশাঙ্ক[২] | গৌড়, দক্ষিণে গঞ্জাম ও উত্তরে কান্যকুব্জ পর্যন্ত |
৬২৫ | জয়নাগ | কর্ণসুবর্ণ |
৬৩৮-৬৪২ | অজানা[৩] | |
৬২৫-৭০৫ | খড়গ রাজবংশ[৪] খড়েগাদ্যম জাত খড়গ দেবখড়গ রাজারাজভট | বঙ্গ, সমতট |
খ্রিস্টীয় ছয় শতকের শেষের দিকে পরবর্তী গুপ্ত রাজাদের অধীনে পশ্চিম ও পূর্ব বাংলার অংশ বিশেষে গৌড় রাজ্যের উদ্ভব হয়। সাত শতকের প্রথম দিকে শশাঙ্ক গৌড়ে ক্ষমতা দখল করেন। মগধ তার রাজ্যের অংশ ছিল। এ বিষয়ে তেমন কোনো বিরোধ নেই যে, তিনিই ছিলেন বাংলার প্রথম অতি গুরুত্বপূর্ণ রাজা। বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্কই প্রথম যিনি বাংলার বাইরে উত্তর ভারতে প্রাধান্য বিস্তারকল্পে আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। এদিক থেকে তিনি পরবর্তীকালের পাল বংশীয় রাজা ধর্মপাল ও দেবপাল-এর আক্রমণাত্মক উত্তর ভারতীয় নীতির অগ্রদূত। কর্ণসুবর্ণ ছিল তার রাজ্যের রাজধানী।
মাৎস্যন্যায়ম শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলায় বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য যুগের শুরু হয়। মোটামুটিভাবে ৬৫০ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এক শতকেরও বেশি সময় ধরে গৌড়ের ইতিহাস খুবই অস্পষ্ট। এ সময়ে হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর (৬৪৬ অথবা ৬৪৭ খ্রিঃ) পর বাংলায় রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখা দেয়, তার মন্ত্রীরা বলপূর্বক তার রাজ্য দখল করে নেয় এবং চৈনিক দূত ওয়াঙ-হিউয়েন সে অভিযাত্রার পর তিববতের ক্ষমতাধর রাজা শ্রং-সান-গ্যাম্পো কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেন। সাত শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলায় দুটি নতুন রাজবংশের আবির্ভাব ঘটে- গৌড় ও মগধে (পশ্চিম বাংলা ও দক্ষিণ বিহার) পরবর্তী গুপ্ত বংশ এবং বঙ্গ ও সমতটে (দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা) খড়গ রাজবংশ। কিন্তু এ দুটি রাজবংশের কোনোটাই বাংলায় শক্তিশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়নি।
মাৎস্যন্যায়ম শশাঙ্কের মৃত্যুর পর বাংলায় বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্য যুগের শুরু হয়। মোটামুটিভাবে ৬৫০ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এক শতকেরও বেশি সময় ধরে গৌড়ের ইতিহাস খুবই অস্পষ্ট। এ সময়ে হর্ষবর্ধনের মৃত্যুর (৬৪৬ অথবা ৬৪৭ খ্রিঃ) পর বাংলায় রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা দেখা দেয়, তার মন্ত্রীরা বলপূর্বক তার রাজ্য দখল করে নেয় এবং চৈনিক দূত ওয়াঙ-হিউয়েন সে অভিযাত্রার পর তিববতের ক্ষমতাধর রাজা শ্রং-সান-গ্যাম্পো কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করেন। সাত শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বাংলায় দুটি নতুন রাজবংশের আবির্ভাব ঘটে- গৌড় ও মগধে (পশ্চিম বাংলা ও দক্ষিণ বিহার) পরবর্তী গুপ্ত বংশ এবং বঙ্গ ও সমতটে (দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা) খড়গ রাজবংশ। কিন্তু এ দুটি রাজবংশের কোনোটাই বাংলায় শক্তিশালী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়নি।
খ্রিস্টীয় আট শতকের প্রথমার্ধে পুনঃপুনঃ বৈদেশিক আক্রমণে বাংলা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল কনৌজ রাজ যশোবর্মণের (৭২৫-৭৫২ খ্রি.) আক্রমণ। কাশ্মীরের ললিতাদিত্য অচিরেই যশোবর্মণের গৌরবকে ম্লান করে দেন। গৌড়ের পাঁচ জন রাজা ললিতাদিত্য কর্তৃক পরাজিত হয়েছিলেন বলে কাশ্মীরের ঐতিহাসিক কলহন উল্লেখ করেছেন। এ থেকে গৌড়ের রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কেন্দ্রীয় শক্তির অভাবে স্থানীয় প্রধানগণ স্বাধীন হয়ে ওঠেন এবং নিজেদের মধ্যে প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার লড়াই-এ লিপ্ত হন। পুনঃপুনঃ বৈদেশিক আক্রমণ রাজনৈতিক ভারসাম্য বিনষ্ট করে এবং তাতে বিচ্ছিন্নতার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়।
প্রাচীন বাংলার ইতিহাসে পাল রাজাদের শাসন একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় ছিল। পাল রাজাদের দীর্ঘ সময়ের ইতিহাস বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা করা যায়- যেমন (১) ধর্মপাল (আ. ৭৮১-৮২১ খ্রি.) ও দেবপাল-এর (আ. ৮২১-৪৬১ খ্রি.) অধীনে পাল বংশের উত্থান ও প্রতিপত্তি প্রতিষ্ঠার যুগ। এরপরে আসে (২) স্থবিরতার যুগ (আ. ৮৬১-৯৯৫-১০৪৩) শাসনামলে এ স্থবিরতার যুগের অবসান ঘটে এবং পাল বংশের পুরনো গৌরব পুনঃপ্রতিষ্ঠা লাভ করে। এ কারণে তাকে পাল বংশের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়। পাল বংশের শেষ অধ্যায় হলো অবনতি ও অবক্ষয়ের যুগ। অবশ্য রামপাল (আ. ১০৮২-১১২৪), তার তেজোদ্দীপ্ত শাসন দ্বারা সাময়িকভাবে এ অবক্ষয়ের যুগকে রোধ করেছিলেন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর পাল সাম্রাজ্য বেশি দিন টিকে থাকেনি। বারো শতকের তৃতীয় চতুর্থাংশে সেন বংশের উত্থানের ফলে পাল সাম্রাজ্যের পতন ঘটে।
মহীপালের রাজত্বকালে (আ. ১০৭৫-১০৮০ খ্রি.) পালবংশের এ দুর্বলতা সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত হয়। এ সময় কৈবর্ত প্রধান দিব্য এক সামন্ত বিদ্রোহের মাধ্যমে বরেন্দ্র অঞ্চলে (উত্তর বাংলা) স্বাধীন শাসন প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন। কেন্দ্রীয় শাসন দুর্বল হয়ে পড়লে স্বাভাবিকভাবেই বিচ্ছিন্নতা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। উত্তর বাংলায় দিব্য-র সাফল্য এ প্রবণতার উজ্জ্বল উদাহরণ।
রামপালের (আনু. ১০৮২-১১২৪ খ্রি.) শৌর্যবীর্য ও শক্তি ছিল পাল বংশের শেষ গুরুত্বপূর্ণ আলোকচ্ছটা। তিনি উত্তর বাংলায় পাল আধিপত্য পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে পালদের রাজ্য বিস্তারের সক্ষমতা প্রমাণ করেন।
সেনগণ বাংলায় একশ বছরেরও বেশিকাল ধরে (আনু. ১০৯৭-১২২৩ খ্রি.) কর্তৃত্ব করেন। এ বংশের পাঁচজন নৃপতি (বিজয়সেন, বল্লালসেন, লক্ষ্মণসেন, বিশ্বরূপসেন ও কেশবসেন) এ সময়ে রাজত্ব করেন। এটা লক্ষণীয় যে, মুহম্মদ বখতিয়ার খলজীর আক্রমণ পশ্চিম ও উত্তর বাংলার অংশবিশেষে সেন শাসনের অবসান ঘটায় (১২০৪ খ্রি.)। লক্ষ্মণসেন পিছু হটে এ সময় দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় তাদের অধিকৃত অঞ্চলে চলে আসেন। লক্ষ্মণসেনের মৃত্যুর পর তাঁর দু পুত্র এখানে কিছুকাল রাজত্ব করেন। আরও লক্ষণীয় যে, বিজয়সেন বর্মণ ও পালদের ক্ষমতাচ্যুত করে সমগ্র বাংলাকে একক শাসনাধীনে আনতে সক্ষম হন এবং ১২০৪ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ অধিকার অক্ষুণ্ণ থাকে। সুতরাং এক অর্থে বলা যায় যে, শুধু সেন আমলেই সমগ্র বাংলা একক শাসনাধীনে আসে। পূর্ববর্তী চার শতক ধরে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক স্বাতন্ত্র্য বাংলার ইতিহাসে গভীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব ফেলেছিল। চন্দ্র ও বর্মণদের রাজধানী বিক্রমপুর সেনদের সময়েও রাজধানী ছিল। এ বংশের প্রথম তিনজন রাজা বিজয়সেন (আনু. ১০৯৭-১১৬০ খ্রি.), বল্লালসেন (আনু. ১১৬০-১১৭৮ খ্রি.) ও লক্ষ্মণসেন (আনু. ১১৭৮-১২০৬ খ্রি.) ছিলেন এ বংশের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। শেষ দুজন নরপতির (বিশ্বরূপ সেন ও কেশবসেন) দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার অত্যন্ত সীমিত অঞ্চলের উপর আধিপত্য ছিল।
তেরো শতকের সূচনালগ্নে (১২০৪-০৫) বাংলায় মুসলিম শাসনের সূত্রপাত হয়। তবে এর অনেক আগে থেকেই বাংলার সাথে আরব মুসলমানদের যোগাযোগ ছিল; অবশ্য সে যোগাযোগের স্বরূপ ছিল বাণিজ্যিক ও ধর্মীয় এবং তা উপকূলীয় অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল।বখতিয়ার খলজীর সামরিক তৎপরতার মধ্য দিয়ে বাংলায় মুসলিম আধিপত্য বিস্তারের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বখতিয়ার খলজী ১২০৩ খ্রিস্টাব্দে বিহার জয় করার পর ভারতে মুহম্মদ ঘুরীর প্রতিনিধি কুতুবউদ্দীন আইবকের সাথে বদাউনে গিয়ে সৌজন্যমূলক সাক্ষাত করেন। সেখান থেকে প্রত্যাবর্তন করে তিনি তার সৈন্যবাহিনী আরও শক্তিশালী করেন এবং ১২০৪-০৫ খ্রিস্টাব্দে আকস্মিকভাবে বাংলা আক্রমণ করে রাজা লক্ষ্মনসেনের সাময়িক রাজধানী নদীয়া অধিকার করেন। এখানে অগাধ ধনসম্পদ, অগণিত পরিচারক-পরিচারিকা ও বহুসংখ্যক হাতি বখতিয়ারের হস্তগত হয়। অতঃপর তিনি বাংলার ঐতিহ্যবাহী রাজধানী গৌড় দখল করে সেখানে তার রাজধানী স্থাপন করেন এবং প্রায় দু বছরকাল বিজিত রাজ্যের প্রশাসনিক কাঠামো বিন্যাস ও ব্যবস্থাপনায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।
১২০৬ খ্রিস্টাব্দে বখতিয়ারের মৃত্যুর পর থেকে ১২২৭ খ্রিস্টাব্দে ইওজ খলজীর মৃত্যু পর্যন্ত সময়কে বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনাপর্ব বলে অভিহিত করা যায়।
১২২৭ খ্রিস্টাব্দে ইওয়াজের মৃত্যু এবং ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে ইলিয়াসশাহী বংশের প্রতিষ্ঠার মধ্যবর্তী সময়কে বাংলায় মুসলিম রাজ্যের বিস্তৃতি ও সুসংহত করণের যুগ বলে অভিহিত করা যায়।
১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দে ইজ্জউদ্দীন ইয়াহিয়ার মৃত্যুর পর তিনি সাতগাঁয়ের অধিকর্তা হন। অতঃপর হাজী ইলিয়াস আলী মুবারকের সঙ্গে দীর্ঘ সংঘর্ষে (১৩৩৯-১৩৪২ খ্রি.) অবতীর্ণ হয়ে অবশেষে ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে সুলতান শামসুদ্দীন আবুল মুজাফফর ইলিয়াস শাহ উপাধি ধারণ করে লখনৌতির সিংহাসনে আরোহণ করেন এবং বাংলায় ইলিয়াস শাহী সালতানাতের ভিত্তি স্থাপন করেন। এ সালতানাত প্রায় দেড় শত বছর স্থায়ী হয়েছিল (১৩৪২-১৪৮৭ খ্রি.)। ১৩৫২ খ্রিস্টাব্দে ইলিয়াস শাহ ফকরউদ্দীন মুবারক শাহের পুত্র ও উত্তরাধিকারী ইখতিয়ার উদ্দীন গাজী শাহকে পরাজিত করে সোনারগাঁও দখল করতে সক্ষম হন। ফলে সমগ্র বাংলা তাঁর কর্তৃত্বাধীনে চলে আসে। ইলিয়াস শাহ একজন দৃঢ়চেতা ও দক্ষ শাসক ছিলেন এবং তার বিচক্ষণতা ও রাজনৈতিক দূরদৃষ্টির বলে তিনি শাহ-ই-বাঙ্গালাহ, শাহ-ই-বাঙালিয়ান ও সুলতান-ই-বাঙ্গালাহ উপাধিতে ভূষিত হন। প্রায় ষোলো বছর রাজত্ব করার পর ১৩৫৮ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়।
১৩৪২ থেকে ১৪৮৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত সময়ে ইলিয়াস শাহ, সিকান্দর শাহ, জালালউদ্দীন মুহম্মদ শাহ, নাসিরউদ্দীন মাহমুদ শাহ, রুকনউদ্দীন বারবক শাহ, ইউসুফ শাহ ও জালালউদ্দীন ফতেহ শাহ-এর আমলে বাংলার সালতানাতের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটে। বলতে গেলে, সমগ্র বাংলা এবং পশ্চিম ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নিকটবর্তী কিছু এলাকা বাংলা সালতানাতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।
(১৪৮৭ খ্রি.) সাইফউদ্দীন আবুল মুজাফফর ফিরুজ শাহ উপাধি গ্রহণ করে সিংহাসনে আরোহণ করেন। ঐতিহাসিকগণ গরীব ও নিঃস্বদের প্রতি তাঁর বদান্যতা ও করুণার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি ন্যায়বান, উদার ও হিতৈষী শাসক ছিলেন। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা ও বদান্যতার ক্ষেত্রে তিনি তাঁর সর্বশক্তি নিয়োগ করেন এবং প্রজাদের জন্য শান্তি ও স্বস্তি নিশ্চিত করেন। তিনি শিল্পকলা ও স্থাপত্যেরও পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তাঁর মুদ্রা ও শিলালিপি থেকে মনে হয় যে, তিনি বাংলার এক বিশাল অঞ্চল শাসন করেন। তিন বছর রাজত্ব করার পর তিনি ৮৯৬ হিজরিতে (১৪৯০ খ্রি.) স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন কিংবা গোপনে নিহত হন।
দ্বিতীয় মাহমুদ শাহের হত্যার পর সিদি বদর ৮৯৬ হিজরিতে (১৪৯০ খ্রি.) শামসুদ্দীন আবু নছর মুজাফফর শাহ উপাধি ধারণ করে সিংহাসনে আরোহণ করেন।তাঁর রাজত্বকাল ৮৯৬ হিজরি (১৪৯০ খ্রি.) থেকে ৮৯৯ হিজরি (১৪৯৩ খ্রি.) পর্যন্ত প্রায় তিন বছর স্থায়ী ছিল।
হাবশী সুলতান শামসুদ্দীন মুজাফফর শাহকে হত্যা করে এ বংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দীন হোসেন শাহ সিংহাসন অধিকার করেন। তিনি মুজাফফর শাহের অধীনে উজির পদে নিয়োজিত ছিলেন। মুজাফফরের জীবনের করুণ পরিণতিতে হোসেনের ভূমিকা ছিল এবং ১৪৯৩ খ্রিস্টাব্দে নেতৃস্থানীয় অভিজাতগণ তাকে সুলতান নির্বাচিত করে।হোসেন শাহের রাজত্বের শেষ দিকে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্যে পর্তুগিজ প্রতিনিধিদল বাংলায় আসে। ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে হোসেনের রাজত্বের সমাপ্তি ঘটে।
আলাউদ্দীন হোসেন শাহের মৃত্যুর পর তার জ্যেষ্ঠপুত্র নুসরত সুলতান নাসিরউদ্দীন নুসরত শাহ উপাধি ধারণ করে ১৫১৯ খ্রিস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করেন। নুসরত শাহের রাজত্বকালে হোসেনশাহী শাসনে যে অবক্ষয় ও ভাঙন শুরু হয়, তার উত্তরাধিকারীদের রাজত্বকালে তা চরমে পৌঁছে। নুসরত তার কনিষ্ঠ ভ্রাতা মাহমুদকে উত্তরাধিকারী মনোনীত করলেও অভিজাতদের একটি অংশ তার তরুণ পুত্র ফিরুজকে আলাউদ্দীন ফিরুজ শাহ |আলাউদ্দীন ফিরুজ শাহ]] উপাধি দিয়ে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করে (১৫৩২)। ফিরুজের রাজত্বকাল মাত্র নয় মাস স্থায়ী হয়েছিল (১৫৩২-৩৩) এবং তিনি তার পিতৃব্য মাহমুদের হাতে নিহত হন।মাহমুদ বিহারে শেরখানের প্রতিদ্বন্দ্বী জালাল খান লোহানীর পক্ষে বিহার আক্রমণের জন্য ইবরাহিম খানের নেতৃত্বে একটি সৈন্যবাহিনী পাঠান। সুরজগড়ের যুদ্ধে (১৫৩৪) ইবরাহিম পরাজিত হন এবং জালাল খান মাহমুদের শরণাপন্ন হন। এতে করে বিহারে শেরখানের কর্তৃত্বের পথ প্রশস্ত হয়। গুজরাটে হুমায়ুনের ব্যস্ততার (১৫৩৫) সুযোগে শেরখান ভাগলপুর পর্যন্ত এলাকা দখল করে নেন। ১৫৩৬ খ্রিস্টাব্দে শেরখান তেলিয়াগড়ে উপস্থিত হন।
পর্তুগিজ সৈন্যদের সহায়তায় মাহমুদের সৈন্যদল তাকে প্রতিহত করে। ঝাড়খন্ড হয়ে শেরখান গৌড়ের উৎকণ্ঠে এসে উপস্থিত হন। মাহমুদ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এবং শেরখান তার রাজ্য তেলিয়াগড়ি-এ পর্যন্ত বিস্তৃত করেন। মাহমুদ পর্তুগিজদের স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে রাজস্ব আদায়ের অধিকারসহ চট্টগ্রাম ও সাতগাঁওএ তাদের দুর্গ ও বাণিজ্যকুঠি নির্মাণের অনুমতি দান করেছিলেন। এতে বাংলায় পর্তুগিজদের ক্ষমতা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি পায়।
১৫৩৭ খ্রিস্টাব্দে বিহারে শেরখানের অবস্থান ছিল নিরাপদ এবং তিনি তেলিয়াগড়ে গিরিপথ নিয়ন্ত্রণ করছিলেন। দ্বিতীয়বারের মতো শেরখান গৌড়ে উপস্থিত হন এবং বার্ষিক কর হিসেবে মাহমুদের কাছে এক বিশাল অঙ্কের টাকা দাবি করেন। মাহমুদ এতে অসম্মতি জানালে শেরখান গৌড় অবরোধ করেন এবং ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিল মাসে আফগানরা গৌড় দখল করে নেয়। শেষ মুহূর্তে মাহমুদ শেরখানের বিরুদ্ধে হুমায়ুনের সঙ্গে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু গৌড়ে আফগানরা তার দু পুত্রকে হত্যা করলে মাহমুদ মানসিক যন্ত্রণায় বিপর্যস্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। এভাবে ১৫৩৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলার স্বাধীন সালতানাতের অবসান ঘটে।
আফগান শাসন (১৫৩৯-১৫৭৬) বাংলায় ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে রাজমহলের যুদ্ধে দাউদ কররানীর বিরুদ্ধে মুগল বিজয়ের ফলে।
মুগল শাসন (১৭৫৭ পর্যন্ত)' ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দের ১২ জুলাই রাজমহলের যুদ্ধে খান জাহানের কাছে কররানী আফগান সুলতান দাউদ খান এর পরাজয়ের পর বাংলায় মুগল শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
➤১৬১২ খ্রিস্টাব্দে জাহাঙ্গীর-এর সুবাহদার ইসলাম খান চিশতি সমগ্র বাংলা (চট্টগ্রাম ছাড়া) মুগলদের কর্তৃত্বাধীনে আনেন।
➤ মুগল আগ্রাসন প্রতিহত করার ক্ষেত্রে বারো ভূঁইয়া নামে পরিচিত ভূঁইয়ারা ছিলেন সর্বাধিক খ্যাত।রাজা, ভূঁইয়া ও জমিদার, যারা মুগলদের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তারা সংখ্যায় ছিলেন অনেক, প্রায় ৩৬ জন। বহু দশক ধরে বারো ভূঁইয়ারা মুগল আগ্রাসন প্রতিহত করেন। বারো-ভূঁইয়াদের নেতা ছিলেন ঈসা খান যিনি ‘মসনদ-ই-আলা’ উপাধি গ্রহণ করেন। তিনি অন্য ভূঁইয়াদের নিয়ে জোট গঠন করেন এবং ১৫৯৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত মুগলদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে তাদের নেতৃত্ব দেন। ঈসা খানের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র মুসা খান বারো ভূঁইয়াদের নেতৃত্ব গ্রহণ করে মুগলদের বিরুদ্ধে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। কিন্তু জাহাঙ্গীরের রাজত্বকালে সুবাহদার ইসলাম খান চিশতির নেতৃত্বাধীন রাজকীয় বাহিনীর নিকট শেষ পর্যন্ত তাঁরা বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হন।
➤সম্রাট আওরঙ্গজেবের সমর্থনপুষ্ট হয়ে মুর্শিদকুলী খান বাংলা সুবাহর প্রকৃত শাসক হয়ে ওঠেন। তিনি উড়িষ্যার সুবাহদার এবং বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যা এ তিনটি প্রদেশের দীউয়ান এবং মুর্শিদাবাদ, সিলেট, মেদিনীপুর, বর্ধমান ও কটক এ পাঁচটি জেলার ফৌজদার নিযুক্ত হন। আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর শাহ আলম বাহাদুর শাহের রাজত্বকালে তাঁকে দক্ষিণ ভারতে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু ১৭১০ খ্রিস্টাব্দে তাঁকে আবার বাংলার দীউয়ান নিযুক্ত করা হয়। এ সময় থেকে ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত তিনি বাংলায় অবস্থান করেন। তিনি বাংলার অর্থনীতিকে গতিশীল করে তুলেছিলেন এবং রাজকীয় খাজনা নিয়মিত প্রদান করতেন। এ কারণে ১৭১৭ খ্রিস্টাব্দে মুর্শিদকুলী খান বাংলার সুবাহদার হন। তাঁর সুবাহদারি আমলে বাংলার অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছিল। বাংলার রপ্তানি বাণিজ্যে অংশ নিতে আসা বিদেশিরা দেশের আইন মেনে চলতে বাধ্য হয়েছিল।
➤কেন্দ্রকে নিয়মিত কর প্রদান করলেও মুর্শিদকুলী খান প্রকৃতপক্ষে স্বাধীন নওয়াব হয়ে ওঠেন। ফলে মৃত্যুর সময় তিনি তাঁর দৌহিত্র সরফরাজ খানকে তাঁর উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যান। ১৭২৭ খ্রিস্টাব্দে সরফরাজ বাংলার নওয়াব হন। কিন্তু অচিরেই তাঁর পিতা সুজাউদ্দীন মুহম্মদ খান তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে নিজেই ওই বছর বাংলার নওয়াব হন। ১৭৩৯ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর সময় সুজাউদ্দীন খান তাঁর পুত্র সরফরাজ খানকে মসনদের জন্য মনোনীত করে যান। সরফরাজ ছিলেন একজন দুর্বল শাসক। ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে আলীবর্দী খান তাঁকে উচ্ছেদ করেন।
➤আলীবর্দী খানের শাসনামল প্রতি বছর মারাঠা হামলার জন্য স্মরণীয়। মারাঠাদের প্রভাবাধীন মীর হাবিবকে কার্যত উড়িষ্যা ছেড়ে দিয়ে এবং মারাঠাদের চৌথ হিসেবে বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা দিয়ে তিনি তাদের সাথে শান্তি স্থাপন করেন। আলীবর্দী ছিলেন একজন দয়ালু ও কুশলী শাসক। তিনি নীতিপরায়ণ মানসিক প্রকৃতি গড়ে তোলেন এবং সমকালীন অন্যদের মতো তিনি লাম্পট্য ও মদ্যপানে আসক্ত ছিলেন না। জগৎ শেঠ ব্যাংক-মালিক পরিবারের উত্থান ছিল তাঁর শাসনকালের এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের পলাশীর যুদ্ধ এর মাধ্যমে সংঘটিত রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য এ শেঠরাই ছিলেন মূলত দায়ী। ১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দের ১০ এপ্রিল ৮০ বছর বয়সে আলীবর্দী খান মারা যান। তিনি তাঁর দৌহিত্র সিরাজউদ্দৌলাকে সিংহাসনের উত্তরাধিকারী মনোনীত করে যান।
➤বাংলার সিংহাসনে বসার সময় নতুন নওয়াব সিরাজউদ্দৌলার বয়স ছিল মাত্র ২৩ বছর। শীঘ্রই তিনি নিজেকে স্থানীয় ও বিদেশি শত্রু বেষ্টিত দেখতে পান। নিজ পরিবারেই তাঁর সবচেয়ে বড় শত্রু ছিলেন তাঁর মায়ের বড় বোন ঘসেটি বেগম (মেহেরুন্নেসা)। পুর্ণিয়ায় বসবাসকারী তাঁর খালাতো ভাই শওকত জঙ্গ ছিলেন তাঁর অপর বড় প্রতিদ্বন্দ্বী। তাছাড়া ছিলেন আলীবর্দীর সেনাবাহিনীর প্রধান সেনাপতি মীরজাফর আলী খান। তিনি ছিলেন আলীবর্দীর এক সৎ-বোনের স্বামী। সবচেয়ে বিপজ্জনক ছিল জগত শেঠের পরিবার। এরা বাংলার অর্থ-বাজার নিয়ন্ত্রণ করত এবং দরবারে তাদের বহু সমর্থক ছিল। সবচেয়ে বড় শত্রু ছিল ঈস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যারা অনেকটা প্রকাশ্যেই নওয়াবকে উপেক্ষা করত। নওয়াবের কোনো অনুমতি না নিয়েই তারা কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ম সুরক্ষিত করে তুলছিল এবং অন্যান্য সামরিক প্রস্ত্ততি নিচ্ছিল। ফোর্ট উইলিয়ম অপরাধী ও দেশের আইন ভঙ্গকারীদের এক নিরাপদ স্বর্গে পরিণত হয়েছিল।
➤ইংরেজদের আইনের অধীনে আনতে নওয়াব সিরাজউদ্দৌলা কলকাতা আক্রমণ করেন। ইংরেজরা কলকাতা ছেড়ে ফুলতায় চলে যায় এবং মাদ্রাজ থেকে অতিরিক্ত সাহায্যে বলীয়ান হয়ে তারা কলকাতায় ফিরে আসে। নওয়াবের অসন্তুষ্ট কর্মচারী মীরজাফর, জগতশেঠ, রাজবল্লভ ও অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে কর্ণেল রবার্ট ক্লাইভ এক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন। মীরজাফরকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করার অঙ্গীকারে এবং মীর জাফরের ইংরেজদের আঞ্চলিক, আর্থিক ও বাণিজ্যিক সুবিধাদি প্রদানের স্বীকৃতির শর্তে ফোর্ট উইলিয়ম কাউন্সিল সদস্যবর্গ মীর জাফরের সঙ্গে এক গোপন চুক্তি করতে রাজি হয়। এ চুক্তির ফলে এবং মীরজাফর ও অন্যদের বিশ্বাসঘাতকতায় বলীয়ান হয়ে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ জুন ক্লাইভ পলাশীতে পৌঁছে অবস্থান গ্রহণ করেন। সিরাজও কোম্পানি সেনাবাহিনীর মোকাবেলার জন্য সেস্থানে উপস্থিত হন। কিন্তু তিনি আতঙ্কিত হয়ে লক্ষ্য করেন যে, তাঁর সেনাবাহিনীর বৃহত্তর অংশ তাঁর আদেশ অগ্রাহ্য করে নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সিরাজ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালিয়ে যান। কিন্তু তিনি বন্দি হন এবং রাজধানীতে এনে তাঁকে হত্যা করা হয়। গোপন চুক্তির শর্তানুযায়ী ক্লাইভ মীর জাফরকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করেন। প্রকৃতপক্ষে পলাশীর ফলাফলের সঙ্গে সঙ্গে মুগল সার্বভৌমত্বের অবসান ঘটে যদিও প্রকৃত ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে ইংরেজদের আরও এক যুগ লেগেছিল।
পাল বংশ[সম্পাদনা]
- প্রথম গোপাল (৭৫৬-৭৮১)
- ধর্মপাল (৭৮১-৮২১)
- দেবপাল (৮২১-৮৬১)
- প্রথম বিগ্রহপাল (৮৬১-৮৬৬)
- নারায়নপাল (৮৬৬-৯২০)
- রাজ্যপাল (৯২০-৯৫২)
- দ্বিতীয় গোপাল (৯৫২-৯৬৯)
- দ্বিতীয় বিগ্রহপাল (৯৬৯-৯৯৫)
- প্রথম মহীপাল (৯৯৫-১০৪৩)
- নয়াপাল (১০৪৩-১০৫৮)
- তৃতীয় বিগ্রহপাল (১০৫৮-১০৭৫)
- দ্বিতীয় মহীপাল (১০৭৫-১০৮০)
- দ্বিতীয় শূরপাল (১০৭৫-১০৭৭)
- রামপাল (১০৮২-১১২৪)
- কুমারপাল (১১২৪-১১২৯)
- তৃতীয় গোপাল (১১২৯-১১৪৩)
- মদনপাল (১১৪৩-১১৬২)
সেন বংশ[সম্পাদনা]
- হেমন্ত সেন (১০৯৭)
- বিজয় সেন (১০৯৭-১১৬০)
- বল্লাল সেন (১১৬০-১১৭৮)
- লক্ষ্মন সেন (১১৭৮-১২০৬)
- বিশ্বরূপ সেন (১২০৬-১২২০)
- কেশব সেন (১২২০-১২৫০)
বাংলার স্বাধীন সুলতান[সম্পাদনা]
শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ (১৩৪২-১৩৫৮)
(১৩৪২ থেকে পশ্চিম বাংলার লখনৌতি রাজ্যের সুলতান এবং ১৩৫২ থেকে পুরো বাংলায়)
ইলিয়াস শাহী বংশ (প্রথম পর্ব)[সম্পাদনা]
- প্রথম সিকান্দর শাহ (১৩৫৮-১৩৯০)
- গিয়াসুদ্দীন আজম শাহ (১৩৯০-১৪১১)
- সাইফুদ্দীন হামজা শাহ (১৪১১-১৪১৩)
- মুহাম্মদ শাহ (১৪১৩)
বায়াজিদ বংশ[সম্পাদনা]
- শিহাবুদ্দিন বায়াজিদ শাহ (১৪১৩-১৪১৪)
- প্রথম আলাউদ্দীন ফিরোজ শাহ (১৪১৪-১৪১৫)
গণেশ বংশ[সম্পাদনা]
- রাজা গণেশ (১৪১৪-১৪১৫ এবং ১৪১৬-১৪১৮)
- জালালুদ্দীন মুহাম্মদ শাহ (১৪১৫-১৪১৬ এবং ১৪১৮-১৪৩৩)
- শামসুদ্দীন আহমদ শাহ (১৪৩৩-১৪৩৫)
ইলিয়াস শাহী বংশ (দ্বিতীয় পর্ব)[সম্পাদনা]
- প্রথম নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহ (১৪৩৫-১৪৫৯)
- রুকনুদ্দীন বারবক শাহ (১৪৫৯-১৪৭৪)
- শামসুদ্দীন ইউসুফ শাহ (১৪৭৪-১৪৮১)
- দ্বিতীয় সিকান্দর শাহ (১৪৮১)
- জালালুদ্দীন ফতেহ শাহ (১৪৮১-১৪৮৭)
হাবসি বংশ[সম্পাদনা]
- বারবক শাহ (১৪৮৭)
- সাইফুদ্দীন ফিরোজ শাহ (১৪৮৭-১৪৯০)
- দ্বিতীয় নাসিরুদ্দিন মাহমুদ শাহ (১৪৯০)
- শামসুদ্দীন মুজাফ্ফর শাহ (১৪৯০-১৪৯৩)
হুসেন বংশ[সম্পাদনা]
- আলাউদ্দিন হুসেন শাহ (১৪৯৩-১৫১৯)
- নাসিরুদ্দীন নুসরত শাহ (১৫১৯-১৫৩২)
- দ্বিতীয় আলাউদ্দীন ফিরোজ শাহ (১৫৩২-১৫৩৩)
- গিয়াসুদ্দীন মাহমুদ শাহ (১৫৩৩-১৫৩৮)
উত্তর ভারতবর্ষের শূর সম্রাটদের অধীনে বাংলা[সম্পাদনা]
শূর বংশ[সম্পাদনা]
- শের শাহ শূরি (১৫৪০-১৫৪৫)
- ইসলাম শাহ শূরি (১৫৪৫-১৫৫৩)
- ফিরোজ শাহ শূরি (১৫৫৩)
- আদিল শাহ শূরি (১৫৫৩-১৫৫৭)- তার শাসনকালে ১৫৫৫ সালে বাংলার শাসক মুহাম্মদ খান শূরি স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং 'শামসুদ্দীন মুহাম্মদ শাহ' উপাধী ধারণ করে বাংলার সিংহাসনে বসেন।
বাংলার স্বাধীন সুলতান[সম্পাদনা]
শূর বংশ[সম্পাদনা]
- শামসুদ্দীন মুহাম্মদ শাহ (১৫৫৫)
- প্রথম গিয়াসুদ্দীন বাহাদুর শাহ (১৫৫৫-১৫৬০)
- গিয়াসুদ্দীন জালাল শাহ (১৫৬০-১৫৬২)
- দ্বিতীয় গিয়াসুদ্দীন বাহাদুর শাহ (১৫৬২-১৫৬৩)
কররানি বংশ[সম্পাদনা]
- তাজ খান কররানি (১৫৬৩)
- সুলায়মান কররানি (১৫৬৩-১৫৭২)
- বায়াজিদ কররানি (১৫৭২-১৫৭৩)
- দাউদ খান কররানি (১৫৭৩-১৫৭৬)
ঔপনিবেশিক যুগ ১৭৫৭-১৯৪৭ বাণিজ্যের মাধ্যমে সম্পদ আহরণের উদ্দেশ্যে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশে এসে বাণিজ্য বসতি স্থাপন করে সতেরো শতকের মাঝামাঝি। আঠারো শতকের মাঝামাঝিতে কোম্পানি বঙ্গের সর্বময় কর্তা। বাণিজ্যের পাশাপাশি রাজ্য স্থাপন ছিল সমকালীন ইউরোপীয় বেনেবাদ নীতির পরিপন্থি। উল্লেখ্য যে, সমকালীন ইউরোপীয়রা সাগরের ওপাড়ে গিয়ে জনমানবশূন্য বা আদিবাসী অধ্যূষিত এলাকা দখল করে স্ব স্ব জাতির পক্ষে উপনিবেশ স্থাপন করলেও বঙ্গদেশই প্রথম সভ্য দেশ যেখানে একটি ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলো।
No comments:
Post a Comment